১০ ১ উপায়ে
ঘরে বসে ব্যায়াম
শরীর নামের মহাশয়
ব্যায়াম
করতে অনেক যন্ত্রপাতির ব্যবহার হয় এখন। চমৎকার এইসব যন্ত্রপাতির দেখা মেলে বিভিন্ন
জিমে। কিন্তু জিম তো সবার জন্য নয়। অনেকেই নানা করণে জিমে যেতে পারেন না। কিন্তু
তা-ই বলে তো আর ব্যায়াম বাদ দেওয়া ঠিক হবে না। ব্যায়ামের গুরুত্ব অনেক প্রাচীন ।
অনাদিকাল থেকেই খালি হাতে অর্থাৎ
সরঞ্জামহীন নানা ধরনের ব্যায়াম চালু আছে। খালি হাতের এইসব ব্যায়াম বেশ ফলপ্রসূ।
কাজেই ব্যায়ামের সরঞ্জাম নেই-এই অজুহাত এখন আর খাটছে না। ঘরে বসে খালি হাতে যে ১০
টি ব্যায়াম করে শরীরটাকে সুস্থ রাখা সম্ভব সেটাই তুলে ধরা হল।
হাঁটা
সবচেয়ে পুরনো ও সর্বজন গ্রহণযোগ্য একটি ব্যায়াম এই হাঁটা। বিভিন্ন রোগে হাঁটাকে
ব্যাপকভাবে উৎসাহিত করা হয়েছে। হাঁটলে সারা শরীরের অঙ্গ -প্রত্যঙ্গের ব্যায়াম হয়।
সারা শরীর সক্রিয় হয়ে ওঠে। যে কোনো জায়গাতেই হাঁটা সম্ভব। যদি আবহাওয়া ভালো থাকে
তাহলে ঘরের বাইরে হাঁটা যেতে পারে। তবে প্রতিকূল পরিবেশ এবং সময়ে ঘরের মধ্যে
হাঁটতে বাধা নেই। আপনি নিয়ম করে প্রতিদিন পুরো ঘর হেঁটে কয়েকবার চক্কর দিতে পারেন।
ঘরের আশপাশে সিঁড়ি থাকলে,সিঁড়ি বেয়ে কয়েকবার ওঠানামা করতে পারেন। হাঁটলে সবচেয়ে
বেশি উপকার হয় পায়ের মাংসপেশির। এতে পায়ের মাংসপেশির দৃঢ়তা বাড়ে।
লাফনো
শিশু-কিশোর, তরুণ কিংবা যুবকদের জন্য খুবই ভালো ব্যায়াম লাফানো । হৃদপিন্ডের জন্য
এটি খুবই কার্যকর একটি ব্যায়াম। অন্য যে কোনো ব্যায়াম শুরু করার আগে লাফানো ‘ওয়ার্ম-আপ’
হিসেবে কাজ করে। কোনো কিছু ছাড়াই লাফানো যায়, আবার স্কিপিং করেও লাফানো যায়।
স্কিপিং করে লাফানো একটি অতিপরিচিত স্বীকৃত ব্যায়াম। এতে ওজন কমে, মেদ ঝরে,
স্ট্যামিনা বা দম বাড়ে।
বুকডন অনেকেরই
প্রিয় একটি ব্যায়াম এই বুকডন। তবে অনেকের কাছে বিশেষ করে বয়স্কদের কাছে এটি কষ্টকর
ব্যায়াম মনে হতে পারে। মাটিতে উপুড় হয়ে হাত ও পায়ের ওপর ভর করে বুকডন দেওয়াটাই রীতি। প্রথমদিকে অল্প করে শুরু করে ক্রমান্বয়ে
সংখ্যা বাড়াতে হয়। তবে দৈনিক ১০-২০ টা বুকডন দেওয়াই যথেষ্ট। কষ্টকর মনে হলে
হাঁটুতে ভর করেও বুকডন দেওয়া যেতে পারে। দাঁড়িয়ে দেয়ালের বিপরীতেও কাজটি করা যায়।
হাত-পা ও বুকের মাংসপেশি গঠনে বুকডন একটি কার্যকর ব্যায়াম হিসেবে বিবেচিত।
প্যারেড স্কুলে
এটি প্রায়ই করানো হয। তবে ঘরে বসে ছোট-বড় সবাই এটি করতে পারেন। এক জায়গায় দাঁড়িয়ে
পা ওঠা-নামার মাধ্যমে এটি করা যায় সহজেই। পায়ের মাংসপেশিকে সক্রিয় করে সেখানে রক্ত
সরবরাহ বাড়ানোর মাধ্যমে পায়ের শক্তি বৃদ্ধিতে এটি উপকারী।
শরীর ভাঁজ করা পেটের মাংসপেশিকে দৃঢ় করতে ও পেটের মেদ ঝরাতে এটি একটি অত্যন্ত উপকারী
ব্যায়াম। লম্বা করে পা বিছিয়ে বসে কোমর থেকে মাথা পর্যন্ত সামনের দিকে ঝোঁকার সময়
ডান হাত দিয়ে বাম পায়ের বুড়ো আঙুল এবং বাম
হাত দিয়ে ডান পায়ের বুড়ো আঙুল স্পর্শ করতে পারলে আরো ভালো । এভাবে দৈনিক ১৫-২০ বার
করতে থাকলে তলপেটের মেদ কমে যাবে।
জগিং হার্টের
জন্য সব চেয়ে ভালো ব্যায়াম জগিং। জিম জগিং করার জন্য বেশি উপযোগী হলেও ঘরের মধ্যে
জগিং করা যায়। গান শুনতে শুনতে কিংবা টিভি দেখতে দেখতে জগিং করা যেতে পারে। জগিং
খালি পায়ে করা উচিত নয়। জগিং করার জন্য একজোড়া কেডস দরকার।
আসন করে বসা আসন গেড়ে বসা পা ও নিতম্বের জন্য ভালো ব্যায়াম। বেশিরভাগ যোগব্যায়ামই
আসনভিত্তিক । চেয়ার কিংবা বিছানায় বসেও এটি করা যায়। চেয়ারে বসে পা দুটো সামনের
দিকে তুলে ধরা যেতে পারে। একই কাজ করা যেতে পারে খাটের প্রান্তে।
হালকা ভারোত্তোলন ঘরে হাতের কাছে যা-ই পাওয়া যায় তা হাতে নিয়ে ভারোত্তোলনের কাজটি করা যেতে
পারে। জগ কিংবা ভারি বই হাতের কাছে যা পড়বে তাই নিয়ে কাজটি ঝটপট করে ফেলতে হবে।
নাচ দারুন
একটা ব্যায়াম এই নাচ। এ কারণে যারা নাচ করেন তাদের আলাদা করে খুব একটা ব্যায়াম
করতে হয না। হার্টের জন্য ভালো এই নাচ। সারা শরীরের ব্যায়াম হয় নাচে। দেহের
প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গের স্পন্দন হয় নাচের মাধ্যমে।
ষ্টেপ এক্সারসাইজ বা পদক্ষেপণে ব্যায়াম ঘরে বসে করার জন্য উপযোগী একটি ব্যায়াম। এটি করার জন্য
একটি মাঝারি উচ্চতার টুলের দরকার পড়বে।একবার সেই টুলের ওপর আগে ডান পা ও পরে বাম
পা দিয়ে উঠবেন। তারপর আবার বাম পা আগে দিয়ে একইভাবে উঠবেন ও নামবেন। এভাবে বারবার
করতে হবে।